রংপুরে ডিবির অভিযানে পাঁচ মাসে প্রায় ২৮ লাখ টাকার অবৈধ পণ্য সামগ্রী উদ্ধার
প্রকাশের সময়: 17 Sep, 2020

http://www.uttorbangla.com/207934


রংপুরে গেল সাড়ে পাঁচ মাসে অবৈধ মজুদদার, ডিলার, নকল প্রসাধনী ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহকারী এবং বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ন্যায্য মূল্যের ওমমএস এবং টিসিবির তেল, চিনি, ডাল ও চাল এবং বিপুল পরিমাণ নকল হ্যান্ড স্যনিটাইজার ও বিভিন্ন ব্রান্ডের প্রসাধনী উদ্ধার করা হয়। যার অনুমানিক মূল্য প্রায় ২৮ লাখ টাকারও বেশি। এসব অভিযানে নিয়মিত মামলায় ২৩ জনকে আসামি করা ছাড়াও জরিমানা অনাদায়ে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়।
রোববার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরপিএমপি) এর অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি) উত্তম প্রসাদ পাঠক। চলতি বছরের ৩ এপ্রিল হতে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এসব অভিযান পরিচালনা করা হয়।
তিনি জানান, করোনা ক্রান্তিলগ্নে সাধারণ মানুষ যাতে সরকারের দেয়া ন্যায্য মূল্যের ওমমএস ও টিসিবির পণ্য পেতে পারে, সেজন্য অবৈধ মজুদদার ও ডিলারদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে থেকে বিভিন্নস্থানে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা অব্যহত রাখে গোয়েন্দা বিভাগ। গেল এপ্রিল হতে চলতি মাস পর্যন্ত ১৩ হাজার ৪০২ লিটার তেল, ১ হাজার ১৫০ কেজি চিনি, ৫০ কেজি ডাল এবং ৭৭০ কেজি চাল উদ্ধার করা হয়েছে। এসব পণ্যের অনুমানিক মূল্য ১৪ লাখ ৬৬ হাজার ৭৭০ টাকা।
এরমধ্যে সবচেয়ে আলোচিত অভিযান ‘খাটের নিচে তেলের খনি’। নগরীর মধ্য পার্বতীপুরে একটি বাসার শয়ন কক্ষের বঙ্খাটের নিচ থেকে অবৈধভাবে মজুদ করে রাখা বিপুল পরিমাণ টিসিবির তেল উদ্ধার হয়। এছাড়াও কামাল কাছনা তিনমাথা মোড়ের এক প্রবাসীর ভাড়া দেয়া বাড়ি, পালপাড়া, পূর্ব শালবন বোতলাপাড়া, আলমনগর মাছুয়াপট্টি, আশরতপুর পূর্ব ঘাঘটপাড়া এবং সেনপাড়ার একটি বাসা হতে টিসিবি-ওএমএস’র সয়াবিন তেল, চিনি, ডাল ও চাল উদ্ধার করা হয়।
উত্তম প্রসাদ আরও জানান, ওমমএস ও টিসিবির পণ্য উদ্ধার অভিযান ছাড়াও করোনার মধ্যে মানসম্মত স্বাস্থ্যসুরক্ষা সাগ্রমী ও বিভিন্ন পণ্যের উৎপাদন ও সরবরাহ মনিটরিং এবং জনগণের মাঝে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালায় আরপিএমপি’র গোয়েন্দা বিভাগ। এসময় নগরীর মধ্য বাবুখাঁ ও বেতপট্টির দুই ব্যবসায়ীর বাসা ও প্রতিষ্ঠান হতে সাড়ে ৬ লাখ টাকার বিপুল পরিমাণ নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ভিক্সল এবং নকল পণ্য উৎপাদনের সরঞ্জামাদি উদ্ধার হয়।
এছাড়া খাসবাগ বালাপাড়ার এক ব্যবসায়ীর গোডাউন হতে বিভিন্ন ব্রান্ডের কসমেটিকস, পাউডার, ভ্যাসলিন, গিøসারিন, ফেসওয়াস, জেল ও আতরসহ বিপুল পরিমাণ নকল প্রসাধনী সামগ্রী উদ্ধার হয়। যার আনুমানিক মূল্য ৭ লাখ টাকা। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের নিয়মিত অভিযানে প্রায় ৫০ লাখ টাকার বিভিন্ন অবৈধ্য, ভেজাল ও নকল পণ্য এবং পরিবেশ দূষণকারী, অস্বাস্থ্যকর সামগ্রী জব্দ করা হয়েছে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
আরপিএমপি’র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি) উত্তম প্রসাদ পাঠক বলেন, সারাদেশে টিসিবির পণ্য ও ওএমএস কার্যক্রমে কোনো ধরণের মজুদদারি বা দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে কঠোর হুঁশিয়ারী ব্যক্ত করেন। টিসিবির পণ্যের বিষয়ে আইজিপি ও মেট্রোপলিটন কমিশনারের নির্দেশনায় কঠোর সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হয়। যা দেশে সর্বপ্রথম রংপুর থেকে শুরু হয়। টিসিবির পণ্য উদ্ধার অভিযানে ‘খাটের নিচে তেলের খনি’ নিয়ে সারাদেশে ব্যাপক আলোচনা হয়। এই ঘটনায় পুলিশের ইমেজ বৃদ্ধির পাশাপাশি জনগণের জন্য সারাদেশে সরকারের দেয়া ন্যায্য মূল্যের টিসিবির পণ্য বিক্রিতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হয়।